টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে মধ্যমেয়াদি (২০২৫-২৬ অর্থবছর) মূলধন ব্যয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
সরকার মনে করছে মূলধন ব্যয় বাড়ানোর বিকল্প নেই, তাই এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা অর্থনীতির উৎপাদন স্তরে গভীর প্রভাব ফেলছে।
চলতি সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক নথি থেকে ইউএনবি জানতে পেরেছে, ‘মধ্যমেয়াদি মূলধন ব্যয় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ডব্লিউটিওর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক কাঠামো সমন্বয়ের উদ্যোগ এনবিআরের
২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপির ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বা নন-এডিপি মূলধন ব্যয়ের মাধ্যমে মূলধন বিনিয়োগ বরাদ্দ করেছে।
'মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬)' শীর্ষক সরকারি নথি অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুযায়ী তা জিডিপির ৬ দশমিক ০৯ শতাংশ।
নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এডিপির লক্ষ্য হবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণ, সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূর করা।
এডিপি হচ্ছে সরকারি খাতের মূলধন গঠনের প্রধান উৎস। তথ্য বলছে, বিভিন্ন অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের তারতম্য হয়।
২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যে বাজেট বরাদ্দের শতকরা হিসেবে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৭৬ থেকে ৮৮ দশমিক ৬ শতাংশ এবং জিডিপির শতকরা হিসেবে বাস্তবায়ন হয়েছে ৩ দশমিক ৬ থেকে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
নথিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়াতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বার্ষিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২৬ অর্থবছরে কৃষিতে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ
সরকার আইবিএএস ++ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মও চালু করেছে, সম্পর্কিত সব মন্ত্রণালয়কে এই প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করেছে এবং তহবিল পরিচালনা ও প্রকাশের প্রক্রিয়াটি সহজ করেছে।
এছাড়া গত অর্থবছরে প্রকল্প পরিচালকদের সরকারি তহবিলের সব কিস্তি ছাড়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়।
এসব উদ্যোগ প্রকল্প অর্থের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, অপচয় রোধ এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মধ্যমেয়াদে এডিপির আকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য করা হবে।
এডিপি এবং নন-এডিপি মূলধন ব্যয় সরকারি ব্যয়ের মাধ্যমে মূলধন গঠনের দুটি প্রধান বিভাগ।
এছাড়া মূলধন ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে ঋণ ও অগ্রিম, রাজস্ব বাজেট থেকে অর্থায়নকৃত উন্নয়ন কর্মসূচি, নন-এডিপি প্রকল্প এবং নন-এডিপি এফএফডব্লিউ (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) ও হস্তান্তর।
উন্নয়ন বাজেটের প্রাক্কলিত আকার ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ। উন্নয়ন বাজেটের প্রধান উপাদান এডিপি, এর আনুষঙ্গিক ব্যয় ৯৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা: বিশ্বব্যাংক এমডি